নিজস্ব প্রতিবেদক:: পবিত্র রমজান উপলক্ষে সিলেটে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর কর্তৃক কৃষক ও খামারিদের সহযোগিতায় মাসব্যাপী ন্যায্যমূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির উদ্যোগে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ এ বাজারে ক্রেতা সাধারণের ভিড় বেড়েই চলেছে। ভ্রাম্যমাণ বাজারে রমজান মাসজুড়ে এসব প্রোটিন (আমিষ) জাতীয় খাবার ন্যায্যমূল্যে বিক্রির কার্যক্রম চলছে। উদ্বোধনের পর থেকে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটা করতে আসছেন এবং সাধ্যের ভিতরে দাম থাকায় স্থানীয় জনসাধারণের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। খামারিদের উৎপাদিত দুধ, ডিম ও মাংস ন্যায্যমূল্যে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তাদের মাঝে দুধ, ডিম ও মাংসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কিত লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এতে করে ভোক্তা এবং উৎপাদক উভয়ই লাভবান হচ্ছেন। প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ গাড়িটি শহরের বিভিন্ন সড়কে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি করছে। এ গাড়ি থেকে প্রতি কেজি দুধ ৭০ টাকা, এক হালি ডিম ২৬ টাকা, এক কেজি ফার্মের মুরগি ১২৫ এবং সোনালী মুরগী ১৪০ টাকায় কেনা যাচ্ছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নগরীর জেলা পরিষদের সামনে খামারিদের উৎপাদিত দুধ, ডিম ও মাংস ন্যায্যমূল্যে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। জনসাধারণকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ গাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ক্রয় করছেন। বিভিন্ন পেশার জনসাধারণ লাইনে দাড়িয়ে কেনাকাটা করছেন।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, মহামারি করোনার এই দুর্যোগের সময়ে শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রতিটি মানুষের প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করা খুবই জরুরি। এজন্য মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের দোরগোড়ায় এই পুষ্টিকর খাবার পৌঁছে দিতে সরকারের নির্দেশে ভ্রাম্যমাণ বাজারের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে তা বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কৃষক ও খামারিদের কাছ থেকে সরাসরি বিশুদ্ধ ও ভালো মানের দুধ, ডিম এবং সব ধরনের মাংস এনে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এর ফলে সাধারণ ভোক্তাদের পাশাপাশি ন্যায্য দাম পাবেন খামারিরা।
গত ৯ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম আগামী ১২ মে পর্যন্ত সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ৬টি ইজিবাইক এবং ৯টি মিনি ট্রাক এর মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যের ভ্রাম্যমাণ বাজার পরিচালনা করছে জেলা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।
প্রতি বছর রমজান মাসকে সামনে রেখে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা যেভাবে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে থাকে, তা রোধ করার লক্ষ্যেই সরকারের এ উদ্যোগ বলে জানান এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল মঙ্গলবার বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত চলমান নিষেধাজ্ঞাকালে মাছ, হাঁস মুরগি, গবাদিপশু, দুধ, ডিম, মাছের পোনা, মুরগির বাচ্চা, পশু চিকিৎসা সামগ্রী, টিকা, কৃত্রিম প্রজনন সামগ্রী, মৎস্য ও পশু খাদ্য ওষুধ ইত্যাদি পরিবহন ও বিপণন কার্যক্রম নিশ্চিতকরণ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল সভায় সারাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় চালুর নির্দেশ দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।